আমিনুল ইসলাম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একটা বিবৃতি দিয়েছে। সেই বিবৃতিতে শিক্ষকরা দেশের একটি সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের বিচার চেয়েছেন। কারণ এই সংবাদপত্র দেশ-রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাকি ষড়যন্ত্র করছে। এই ঘটনা দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। আমি অবশ্য মোটেই অবাক হইনি। বছর কয়েক আগের ঘটনা। দেশে গিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের সঙ্গে একাডেমিক বিষয়ে আলাপ করার জন্য উনার অফিসে গেলাম। সঙ্গে করে বিসিএস ক্যাডার পুলিশ অফিসার এক বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছি। তার অফিসে ঢুকার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুকে পরিচয় করিয়ে দিলাম। অধ্যাপক মশাই চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সালাম দিয়েছেন এবং ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেছেন। এতে আমি কিছু মনে করিনি। যে কেউ যে কাউকে ‘স্যার’ বলতেই পারেন। 

তবে অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম, গিয়েছি আমি তার সঙ্গে কথা বলতে। অথচ এই ভদ্রলোক সর্বক্ষণ আমার বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বত্রিশ দাঁত বের করে দেশ-জাতি নিয়ে আলোচনা করতে লাগলেন। ভাবখানা এমন, আমাকে তিনি চেনেনই না। তো বের হয়ে আসার পর বন্ধু আমাকে বলছে, দেখলি তো এই অধ্যাপকের অবস্থা। আর তোরা দিন-রাত শুধু আমাদেরই খারাপ বলিস। অথচ এই বন্ধু নিজেও কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলো। তো, আপনারা এমন শিক্ষকদের কাছ থেকে কী আশা করছিলেন? তারা দিন কয়েক আগে নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে সুস্থ-সবল এক ভদ্রমহিলার মরে যাবার ঘটনার জন্য বিবৃতি দেবে? কেন একজন পুলিশ অফিসারের হত্যার সঙ্গে জড়িত আরাভ খান দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে কোটি-পতি বনে গিয়ে দিব্যি দেশে ফিরে এসে ঘুরে-ফিরে আবার দুবাই চলে যেতে পেরেছে। 

এই জন্য বিবৃতি দেবে? কেন এক রাতের ব্যবধানে মুরগির দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এর জন্য বিবৃতি দেবে? এইসব কি আর দেশ-রাষ্ট্রের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নাকি? কোনো দুঃখ তারা এইসব বিষয় নিয়ে বিবৃতি দেবে? উনারা বিশিষ্ট শিক্ষক মানুষ। গবেষণা করে উনাদের মনে হয়েছে, সংবাদ পত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে  এতো অবাক হবার কী আছে! ফেসবুক থেকে